পাঁচ সিটিতে কর্মসূচির কথা ভাবছে বিএনপি

বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে বিএনপি। তাই আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলটি যাচ্ছে না। আসন্ন মে-জুনে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন করার পেছনে সরকারের ‘ফাঁদ’ মনে করছে বিএনপি। আন্দোলন ইস্যুতে এসব নির্বাচনকে নিয়ে আসতে চাইছে দলটি। তাই পাঁচ সিটি করপোরেশন এলাকায় আলাদাভাবে কর্মসূচি পালনের কথা ভাবছে বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এটা দলের সিদ্ধান্ত। তাই সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সরকারের পাতানো ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না। এ ফাঁদ আমরা উলটে ফেলে দেব। ১০ দফা দাবি আদায়ে সামনে আন্দোলনের কর্মসূচি আসবে। আন্দোলন হবে একটাই-এ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে না এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সিটি নির্বাচন ইস্যুতে কর্মসূচি থাকবে। তবে কি ধরনের কর্মসূচি তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, পাঁচ সিটি নির্বাচনে বিএনপির কেউ? স্বতন্ত্র হিসাবেও অংশ নেবে না। বিএনপির কাছে তথ্য রয়েছে-সিলেট ও খুলনায় বিএনপির দুজনকে নির্বাচনে আনার জন্য ক্ষমতাসীন দল বিভিন্ন সংস্থা দিয়ে চাপে রেখেছে। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী যুক্তরাজ্য সফরকালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সিটি নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে তিনি জানিয়ে এসেছেন। এদিকে খুলনা বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগরের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু নির্বাচন করবেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে মঞ্জুও যাবেন না। স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য আরও বলেন, দলের পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নিলে বহিষ্কার করা হবে-এটা বিএনপির সিদ্ধান্ত। তবে কাউন্সিলর পদে প্রতীক না থাকায় তা এড়িয়ে যাওয়া হবে।

২০২১ সালের মার্চ থেকে বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। গত বছর নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটির নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নেয়নি। বিএনপি নেতারা মনে করেন-জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে পাঁচ সিটির নির্বাচনে অংশ নিলে চলমান আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ভিন্ন বার্তা যাবে-বিএনপি শেষ পর্যন্ত এ সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নেবে। তাই সিটি নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক।

বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, ১ রমজান থেকে এ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কেন্দ্র ও তৃণমূলের অন্তত ৫০টি আলোচনা সভা ও ইফতার পার্টিতে অংশ নিয়েছেন। একদিনে তিনি একাধিক অনুষ্ঠানেও অংশ নেন। সবকটিতে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন। এর আগে সাড়ে ৩ হাজার সাবেক ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে তিনি ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। কারণ একটাই, আন্দোলন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যে কঠোর আন্দোলনের বার্তা দেওয়া হয়েছে। আগে সিটি নির্বাচন বা কোনো আসনে উপনির্বাচন হলে সে এলাকা কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকত। কিন্তু এবার আর তা হবে না। দেশব্যাপী কর্মসূচি দিলে তা সব জায়গাতে পালন করা হবে।