ইসলামে বিধবা নারীর সামাজিক মর্যাদা

জীবন-মরণ একমাত্র আল্লাহর হাতে। কার কখন হায়াত ফুরাবে—তা কারো জানা নেই। স্ত্রীর আগে স্বামী মারা যায়, আবার স্বামীর আগেও স্ত্রী মারা যায়। কেউ কারো মৃত্যুর জন্য দায়ী নয়। আমাদের সমাজে কোনো নারীর স্বামী মারা গেলে ওই পরিবার ও সমাজের লোকদের অনুতাপ-ভাবনার সীমা থাকে না। বর্বর যুগের মতো সেই অসভ্য রীতি আমাদের সমাজে দৃষ্টিগোচর হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মে বিধবাকে অবমূল্যায়ন করা হলেও ইসলামের সূচনালগ্ন থেকে আজ অবধি বিধবাকে একজন মানুষ হিসেবে মূূল্যায়ন করেছে। কখনোই ‘অপয়া’ ও ‘অলক্ষ্মী’ মনে করে না। কিন্তু মানুষ নির্মমভাবে বিধবাকে স্বামীখেকো বা এ ধরনের অযাচিত শব্দ বলে অভিহিত করে থাকে। অথচ স্বামীর মৃত্যুর ওপর কোনো ধরনের হাত থাকে না স্ত্রীর। এই কুসংস্কারের কারণে কত নারীকে জীবন হারাতে হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। রাসুল (সা.) নবুয়ত লাভের আগেই বিধবা নারী বিয়ে করে যেন পৃথিবীর বিধবাদের পক্ষে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। বিধবাদের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলের কণ্ঠে দ্ব্যার্থহীনভাবে উচ্চারিত হয়েছে।

আউফ বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি ও (নিজের যত্ন না নেওয়ায়) চেহারায় দাগ পড়া নারী পরকালে এভাবে থাকব অথবা শাহাদাত ও মধ্যমা আঙুলের চেয়ে বেশি দূরত্ব থাকবে আমাদের মধ্যে। সে হলো সেই নারী, যার স্বামী মারা গেছে এবং তার বংশীয় মর্যাদা ও সৌন্দর্য থাকার পরও সে নিজেকে বিরত রাখে এতিম সন্তানদের জন্য যতক্ষণ না সন্তানরা (স্বাবলম্বী হয়ে) পৃথক হয়ে যায় অথবা মারা যায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫২৪৯)