মডেল তাসনিয়ার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলার আবেদন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ও নানা ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করার অভিযোগে নবীন অভিনেত্রী ও মডেল তাসনিয়া রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক জসীম আহমেদ।

বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৫ ও ২৯ ধারায় প্রযোজক জসীম মামলার আবেদন করেন বলে তার আইনজীবীরা জানান। এদিন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মডেল তাসনিয়ার বিরুদ্ধে মামলার আবেদনের কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন রাসেল ও শাহেদুল  আজম জানান, বিচারক পরে আদেশ প্রদান করবেন।

আল মামুন রাসেল বলেন, ‘জসীম আহমেদের সঙ্গে তাসনিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আর এই সম্পর্কের অপব্যবহার করেছে তাসনিয়া। তার নামে মিথ্যা মামলাও করেছে সে। এ ছাড়া কয়েক দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পরিচালক ও প্রযোজকের নামে নানা মিথ্যা জিনিস প্রকাশ করছে, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮-এর ২৯ ধারার অপরাধ।’

অ্যাডভোকেট শাহেদুল আজম বলেন, ‘এই মডেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে সে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে। সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে সাধারণত এই ধরনের প্রতারণার শিকার হওয়া ভিকটিম মুখ খোলেন না।

পরিচালক-প্রযোজক জসিম আহমেদকে বিষয়টি নিয়ে চুপ না থেকে প্রতিবাদ করার জন্য সাদুবাদ জানান এই আইনজীবী।

শাহেদুল আজম আরো বলেন, ‘মডেল তাসনিয়া একটার পর একটা সিরিজ অব ওফেন্স করেই যাচ্ছে। যা তার ফেসবুক পাতা দেখলে বোঝা যায়। তার চরিত্র ও লাইফ স্টাইল সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে তার ফেসবুক পাতায়। তার মতো মেয়েরা যখন কোনো প্রমিনেন্ট মানুষের বিরুদ্ধে লাগে তখন বোঝা যায় তার কোনো উদ্দেশ্য আছে। আমরা সাইবার ক্রাইম ট্রাইবুনালে মামলা করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করব।’

এদিকে তাসনিয়ার নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় জসিম আহমেদের বেশ কিছু ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করেছেন। যেখানে একটি বাসায় ছুরি হাতে নিজের গলায় ধরতে দেখা যায় জসিম আহমেদকে এবং অন্য একটি ভিডিওতে একটি প্রাইভেট কারের ভেতরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। যেখানে প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন জসিম আহমেদ।

ভিডিও প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জসিম আহমেদ বলেন, ‘সে আমার সাথে যখনই মিট করেছে গোপনে এমন ভিডিও রেকর্ড করেছে। সে আমার বাসায় এসে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে আমি ইমোশনালি বোঝানোর জন্য আমার নিজের গলায় ছুরি রাখি। সে সময় মেয়েটিকে আমার মাতাল মনে হচ্ছিল। সে যখন আমার বাসায় অনেক ভাঙচুর করছিল, আশপাশের লোকজন চলে আসবে এ জন্য আমি তাকে বোঝানোর জন্য কিচেন থেকে ছুরি আনি।’

ওই দিনের কোনো তথ্য-প্রমাণ আছে কি না প্রশ্নে জসিম আহমেদ বলেন, ‘আমার বাসায় ঘটনাটি ঘটে ২০২০ সালের অক্টোবরের ১৩ তারিখে। কিন্তু আমি ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর তার  মাথায়-হাতে ব্যান্ডেজসহ ভিডিও পোস্ট করতে দেখেছি। এ ছাড়া এই ঘটনার এক দিন ও দুই দিন পর ২০২০ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট তার ফেসবুকে প্রকাশিত ছবিতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে কোনো হোটেলে ঘুরছে এমনটি দেখেছি। তার বহু রূপ, এতে আমিই এলোমেলো হয়ে গেছি।

তানজিম তাসনিয়া নিজেকে একজন মডেল পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাদের সুনাম ও খ্যাতি বিনষ্ট করে বড় অঙ্কের অর্থ আদায়ের জন্য সমাজের বিভিন্ন বিত্তশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একাধিক, মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।