৪ দিনের রিমান্ডে সাবেক সিইসি নূরুল হুদা

প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। ১১টি কারণে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আজ সোমবার ঢাকার চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান এই রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী, কর্মকর্তা রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুজ্জোহা সরকার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে বেলা সোয়া ৩টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করে হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ৪টা ১০ মিনিটের সময় তাকে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়।

১১টি কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। এ কারণগুলো হলো

আবেদনে যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে-

১। গ্রেপ্তার আসামি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকালে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি সেই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্পন্ন করতে পারেন নাই ও দেশকে গভীর সংকটের মধ্যে নিমজ্জিত করেছেন।

২। প্রশাসনকে একটি পক্ষে ব্যবহার করেছেন। যাতে করে সংবিধান অমান্য করেছেন ও শপথ ঠিক রাখতে পারেন নাই।

৩। দণ্ডবিধি আইনের ১৭১ক ধারার সংজ্ঞা মতে নির্বাচনের ছদ্মবেশ ধারণ করে দিনের ভোট রাতে সম্পাদন করার নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাধা দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেন। সে নির্বাচন বডির প্রধান বাক্তি ছিলেন। তিনি অন্যান্য কমিশনার এবং বিভাগীয় ও জেলা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।

৪। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরকারি আদেশ, সাংবিধানিক ক্ষমতা হ্রাস, দেশের জনগণের ভোটাধিকার লঙ্ঘন করেছেন। তরুণ সমাজের ভোট বিমুখ, ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।

৫। আসামি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকাবস্থায় কার পরামর্শে ও সহযোগিতায় ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিতদের দিয়ে দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করে মিথ্যা বিবৃতির মাধ্যমে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন এবং মিথ্যা গেজেট প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করেন।

৬। তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করার লক্ষ্যে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে প্রহসনমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে কত টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন তা উদঘাটন। যাতে করে কোটি কোটি নতুন প্রজন্মের ভোটাররা ভোট দিতে পারেন নাই। তাতে দেশে স্বৈরাচারের বীজ বপন করা হয়েছিল।

৭। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতার আসামি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা কার ইন্ধনে ও কি স্বার্থে ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে জনগণকে তাদের ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।

৮। গ্রেপ্তার আসামি একজন ফ্যাসিবাদী বডির মূল নায়ক। তার কাছ থেকে পাতানো নির্বাচনের কৌশল ও জড়িতদের উদঘাটন করা দরকার।

৯। গ্রেপ্তার আসামি কোন কোনো সংসদ আমলে কার কার কাছ থেকে কত টাকা ঘুষ গ্রহণ করে ফলাফল পরিবর্তন করে গেজেটে সাজানো ভোটের ফলাফল প্রকাশ করেছেন তার তথ্য উদঘাটন করা দরকার।

১০। এজাহার নামীয় পলাতক ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ ও গ্রেপ্তার।

১১। মামলার মূল রহস্য উদঘাটন।