ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় রাশিয়ার অবস্থান কী?

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের সংঘাত গতকার রবিবার নতুন মোড় নিয়েছে। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে হামলা চালিয়ে প্রথমবারের মতো সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে ইরানের দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার ওপর নজর এখন বিশ্বের। যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের অবস্থান কী হতে পারে সেটি নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরা।

ক্রেমলিন আজ সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে পুতিনের বৈঠকের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন যে ইরান ট্রাম্পকে একটি আপস করার প্রস্তাব দেবে এবং পুতিনকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে জড়িত রাখতে চাইবে।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে মার্কিন হামলার বিষয়ে ক্রেমলিন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এর আগে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, রাশিয়া সামরিকভাবে এই সংঘাতে জড়িত হবে না। কারণ, রাশিয়া ইউক্রেনে নিজস্ব সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে। এছাড়াও পুতিনের মতে, এই সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই।

রাশিয়া বহু বছর ধরে ইরানকে সমর্থন করে আসছে। রাশিয়ার বক্তব্য ইসরায়েল সম্পর্কেও খুব সতর্ক। কারণ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং রাশিয়ার ১৫ লক্ষেরও বেশি রুশভাষী মানুষ আজ ইসরায়েলে বাস করে। পুতিন এমনকি ইসরায়েলকে প্রায় রুশভাষী দেশ বলে অভিহিতও করেছিলেন।

এদিকে, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, ইরানের ওপর হামলা চালিয়ে আমেরিকানরা খুব বেশি কিছু অর্জন করতে পারেনি। তিনি আরও বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে আসা ট্রাম্প এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক নতুন দফা যুদ্ধ শুরু করেছেন।

অন্য একটি বিশ্লেষণে আল-জাজিরা বলছে, পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে একটি পুরোদমের যুদ্ধে থাকা অবস্থায়ও ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ভূমিকা পালন করতে চান। সেক্ষেত্রে পুতিন ইরানের হয়ে ও ইসরায়েলের হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সমঝোতা হতে পারে। তবে আপাতত ট্রাম্পকে কোনো সমঝোতায় আগ্রহী নয় বলেই মনে হচ্ছে। ইসরায়েলের জয় দেখতেই বেশি আগ্রহী তিনি।