ইরানে শাসন বদলে ইসরায়েলি পরিকল্পনা ইরানিরা কি সমর্থন করে?

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের জনগণকে তাদের সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানোর পর এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অজুহাত তুলে ইরানে চালানো হামলার উদ্দেশ্য কি তাহলে সরকার পরিবর্তন? এর ইসরায়েলের এই পরিকল্পনা কি ইরানিরা সমর্থন করছে?

প্রশ্নটি রেখে আলজাজিরা কথা বলেছে ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট জামাল আবদির সঙ্গে। তার মন্তব্য তুলে ধরে সোমবার (১৬ জুন) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলজাজিরা।

জামাল আবদি মনে করেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাগুলো ইরানের শাসন পরিবর্তনের পরিকল্পনায় আগে যারা সহানুভূতিশীল ছিলেন, তাদেরও এখন বিমুখ করে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আলজাজিরাকে জামাল আবদি বলেন, “আমি মনে করি এটা নেতানিয়াহুর এক ভয়াবহ ভুল হিসাব। ইসলামিক রিপাবলিকের জনসমর্থন অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছিল। ২০২২ সালের ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলন ছিল ইরানিদের ভেতরে জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ; শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের জোরালো আহ্বান।”

“দীর্ঘদিন ধরে নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রকে এই শাসন পরিবর্তনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন। একই সঙ্গে ইসরায়েলও একটি মনস্তাত্ত্বিক অভিযানে লিপ্ত ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানিদের ওপর চাপ বাড়ানো এবং ইসলামিক রিপাবলিককে দোষারোপ করা, যা এক অর্থে যৌক্তিকও ছিল,” যোগ করেন জামাল আবদি।

তিনি বলেন, “ইরানি প্রবাসীদের মধ্যে একটা অংশ আগে বিশ্বাস করতেন, ইসরায়েল যদি হামলা করে, তাহলে তা কেবল ‘ইসলামিক রিপাবলিকের লক্ষ্যবস্তুর’ দিকেই হবে, সাধারণ ইরানিদের দিকে নয়।”

“কিন্তু এখন সেই বিশ্বাস ভেঙে গেছে। নেতানিয়াহু এখন ‘বৈরুত কৌশলের’ কথা বলছেন অর্থাৎ তেহরানকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। মনে হচ্ছে, তারা এখন সরাসরি শাসনব্যবস্থা অস্থিতিশীল করার পথে হাঁটছে,” যোগ করেন জামাল আবদি।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির শাসন ব্যবস্থায় ইরানে যারা ক্ষুব্ধ ছিল, তাদের মধ্যে অনেকে ইসরায়েলকে ‘ত্রাতা’ হিসেবে দেখতো। তবে সেই অবস্থা আর নেই।
আলজাজিরাকে জামাল আবদি বলছেন, “আর যেসব মানুষ একসময় ভেবেছিল ইসরায়েল হয়তো তাদের মুক্তিদাতা হবে, তারা এখন বুঝতে পারছে গাজা, লেবানন কিংবা পুরো অঞ্চলে যা ঘটেছে, এখন তা-ই ইরানের জন্য অপেক্ষা করছে। আর সেটি কোনো মুক্তি নয়, সেটা মৃত্যু।”