জরুরি পরামর্শের জন্য পুতিনের কাছে যাচ্ছেন আরাগচি

জরুরি পরামর্শের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।

তিনি জানিয়েছেন, রবিবার (২২ জুন) মস্কো যাবেন এবং সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি বৈঠক করবেন।

রবিবার ইস্তাম্বুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আরাগচি বলেন, “রাশিয়া ইরানের বন্ধু এবং আমাদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।”

আরাঘচি আরো বলেন, “আমরা সবসময় একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করি এবং আমাদের অবস্থান সমন্বয় করি।”

তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া ছিল জেসিপিওএ পারমাণবিক চুক্তির অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ।

“আমি আগামীকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব এবং আমরা একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব,” বলেন আরাগচি।

ইরানের দুটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি ইসরায়েলের

ইসরায়েলি বিমান বাহিনী আজ রবিবার দুপুরে ইরানের দেজফুল বিমানবন্দরে বোমা হামলা চালিয়ে দুটি ইরানি এফ-৫ যুদ্ধবিমান ধ্বংসের দাবি করেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আরো জানিয়েছে, গত রাতে মধ্য ইরানে ২০টি যুদ্ধবিমান দ্বারা পরিচালিত হামলায় কয়েক ডজন ইরানি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে।

ইসরায়েলের এসব দাবির বিষয়ে ইরান এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

ইসরায়েলে ইরানের হামলায় আহত ৮৬

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পর ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তেহরানের সর্বশেষ হামলায় ইসরায়েলে ৮৬ জন আহত হয়েছেন। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।

ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রবিবার (২২ জুন) ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহতের সংখ্যা বেড়ে ৮৬ জনে পৌঁছেছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা মাঝারি, ৭৭ জন হালকা আঘাত পেয়েছেন, চারজন তীব্র উদ্বেগজনিত সমস্যায় ভুগছেন এবং তিনজনের চিকিৎসা মূল্যায়ন চলছে, তাদের অবস্থা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে, বেন গুরিওন বিমানবন্দরসহ ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইরান। অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে আছে সহায়তা ঘাঁটি, কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং একটি জৈবিক গবেষণা কেন্দ্র।

ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ঘোষণা করেছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণ চালানো হয়েছে।

তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তেল আবিব, নেস তজিওনা এবং হাইফার আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।

ইসরায়েলি বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি ইরানের

ইরানের সশস্ত্র বাহিনী দাবি করেছে, রবিবার সকালে তারা ইসরায়েলের গুরিওন বিমানবন্দরসহ দেশটির একাধিক সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। খবর আলজাজিরার।

সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ধৃত দিয়ে ইরানি সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, “অপারেশন অনেস্ট প্রমিজ ৩-এর ২০তম হামলায় ইসরায়েলের বেন গুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সামরিক গবেষণা কেন্দ্র, লজিস্টিক ঘাঁটি এবং কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।”

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, “এই হামলায় দূরপাল্লার তরল এবং কঠিন জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্র- উভয়ের ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত ছিল।”

এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তেল আবিব, নেস তজিওনা এবং হাইফার আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এসব হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম। ১০টিরও বেশি এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থাটি।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, রবিবার ইসরায়েলজুড়ে কমপক্ষে ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র ও দ্বিতীয়টিতে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বাড়েনি: আইএইএ

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর স্থাপনার বাইরের অংশে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বাড়েনি।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) একটি বিবৃতি প্রকাশ করে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে,  “আরো তথ্য পাওয়া গেলে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা ইরানের পরিস্থিতি সম্পর্কে আরো মূল্যায়ন দেবে।”

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামোতে হামলার দাবি ইসরায়েলের

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী (আইএফ) পশ্চিম ইরানে সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোতে বিমান হামলার একটি নতুন শুরু করেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।

কিছুক্ষণ আগে এক ঘোষণায় আইডিএফ বলেছে, রবিবার সকালে নতুন করে হামলা চালিয়ে তারা ইরানের বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আরো দাবি করেছে, আইএএফ পশ্চিম ইরানে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে এবং ইরানি সৈন্যদের হত্যা করেছে।

ইসরায়েলের ১০টির বেশি স্থানে আঘাত হেনেছে ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, আজ রবিবার সকালে ইরানের সর্বশেষ হামলায় ইসরায়েলের ১০টির বেশি স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের সিইও এলি বিন বলেছেন, উদ্ধার সংস্থার দলগুলো সারা দেশে ১০টিরও বেশি স্থানে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ও শার্পনেলের আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় তৎপরতা চালাচ্ছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, হাইফা ও মধ্য ইসরায়েল লক্ষ্য করে কমপক্ষে ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২২টি ক্ষেপণাস্ত্র ও দ্বিতীয়টিতে পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল।

এর মধ্যে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র দেশটিতে সরাসরি আঘাত হেনেছে, তা বিস্তারিত জানায়নি আইডিএফ।

মার্কিন হামলার জবাব ইরান কীভাবে দেবে?

মার্কিন হামলার জবাব ইরান কীভাবে দেবে তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। এ বিষয়ে তেহরানের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক কৌশলগত গবেষণা কেন্দ্রের সিনিয়র গবেষক আবাস আসলানীর সঙ্গে কথা বলেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

আবাস আসলানীর মতে, মার্কিন হামলার পর ইরান সম্ভাব্য তিনটি পরিস্থিতি অনুসরণ করতে পারে।

তিনি বলেন, “প্রথমত ক্ষতির পরিমাণের ওপর নির্ভর করে সীমিত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ ছাড়াও, এটি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি প্রবেশ। ইরান আগেই সতর্ক করে বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে যোগ দিলে তারা সেই পদক্ষেপের জবাব দেবে।”

তিনি আরো বলেন, “দ্বিতীয় পরিস্থিতিটি একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হতে পারে, যেখানে ইরান মার্কিন স্বার্থের পাশাপাশি ইসরায়েলি স্বার্থের বিরুদ্ধে গুরুতর আক্রমণে জড়িত হওয়ার চেষ্টা করবে। এর মধ্যে ইসরায়েলি পারমাণবিক স্থাপনা সহ বিস্তৃত লক্ষ্যবস্তু অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে এবং ইরানের মিত্ররা এতে যোগ দিতে পারে।”

তিনি আরো যোগ করেন, “তৃতীয় বিকল্পটি হলো ইরান এ অঞ্চলে পশ্চিমা শক্তির ভারসাম্যকে অবরুদ্ধ করার জন্য হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে।”

যুক্তরাষ্ট্রকে চিরস্থায়ী পরিণতির হুঁশিয়ারি ইরানের

ইরানে মার্কিন হামলার পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি তার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। খবর আল জাজিরার।

রবিবার (২২ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে আরাঘচি বলেন, “জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র একটি গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ করেছে। তারা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটিতে) স্বাক্ষরকারী হয়েও ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “আজ সকালের ঘটনা ভয়ঙ্কর এবং এর চিরস্থায়ী পরিণতি হবে। এই ধরনের বিপজ্জনক, বেআইনি ও অপরাধমূলক আচরণে প্রতিটি জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।”

আরাঘচি স্পষ্ট করে জানান, “ইরান তার সার্বভৌমত্ব, স্বার্থ ও জনগণকে রক্ষা করতে “সমস্ত বিকল্পই উন্মুক্ত রাখছে।”

ইরানে হামলার পর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ট্রাম্পের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল ৮টা) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন।

ট্রাম্পের প্রায় ৩ মিনিটের পূর্ণাঙ্গ ভাষণটি প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। ট্রাম্পের ভাষণটি এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো-

“কিছুক্ষণ আগে, মার্কিন সেনাবাহিনী ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা- ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহানে বিশাল নির্ভুল হামলা চালিয়েছে। ইরান ভয়াবহ ধ্বংসাত্মক পারমাণবিক প্রকল্প শুরু করার পর থেকেই সবাই বছরের পর বছর ধরে এই নামগুলো শুনে আসছে।

আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং বিশ্বের এক নম্বর রাষ্ট্র সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক দ্বারা সৃষ্ট পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা।

আজ রাতে, আমি বিশ্বকে জানাতে পারি যে, ইরানে মার্কিন হামলাগুলো ছিল একটি অসাধারণ সামরিক সাফল্য। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দালাল ইরানকে এখন শান্তি স্থাপন করতে হবে।

যদি তারা তা না করে, তাহলে ভবিষ্যতের আক্রমণগুলো অনেক বড় ও অনেক সহজ হবে।

৪০ বছর ধরে, ইরান বলে আসছে, আমেরিকার মৃত্যু, ইসরায়েলের মৃত্যু। তারা আমাদের জনগণকে হত্যা করছে, তাদের হাত উড়িয়ে দিচ্ছে, রাস্তার পাশে বোমা মেরে তাদের পা উড়িয়ে দিচ্ছে- এটাই ছিল তাদের (ইরানের) বিশেষত্ব।

আমরা এক হাজারেরও বেশি মানুষকে হারিয়েছি এবং মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ইরানের ঘৃণার সরাসরি প্রতিক্রিয়ায় মারা গেছে, বিশেষ করে তাদের জেনারেল কাসেম সোলেইমানের হাতে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে।

আমি অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমি এটা হতে দেব না। এটা আর চলবে না।

আমি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিবি নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাতে চাই। আমরা এমন একটি দল হিসেবে কাজ করেছি। সম্ভবত এর আগে কোনো দল এতটা কাজ করেনি এবং ইসরায়েলের জন্য এই ভয়াবহ হুমকি মুছে ফেলার জন্য আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।

আমি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে তাদের দুর্দান্ত কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমি সেই মহান আমেরিকান দেশপ্রেমিকদের অভিনন্দন জানাতে চাই যারা আজ রাতে এই দুর্দান্ত স্থাপনাগুলো উড়িয়েছেন এবং সমস্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীকে এমন একটি অভিযানের জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই যা বিশ্ব বহু, বহু দশকে দেখেনি।

আশা করি, আমাদের এই সামরিক ক্ষমতা আবার দেখানোর প্রয়োজন পড়বে না। আমি আশা করি তাই হবে।

আমি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান রাজিন কেইন- তিনি একজন অসাধারণ জেনারেল এবং এই আক্রমণে জড়িত সকল মেধাবী সামরিক মনকে অভিনন্দন জানাতে চাই।

এত কিছুর পরেও, এটি চলতে পারে না।

ইরান হয় শান্তিতে আসবে, নয়তো গত আট দিনে আমরা যা দেখেছি তার চেয়েও বড় ট্র্যাজেডি হবে।

মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। আজ রাতের আক্রমণ ছিল সবচেয়ে কঠিন ও সম্ভবত সবচেয়ে মারাত্মক। কিন্তু ইরান যদি দ্রুত শান্তি আলোচনায় না আসে, তাহলে আমরা নির্ভুলতা, দ্রুততা ও দক্ষতার সঙ্গে ইরানের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুগুলোতেও আঘাত করব।

ইরানের বেশিরভাগই কয়েক মিনিটের মধ্যেই ধ্বংস করা যেতে পারে।

পৃথিবীতে এমন কোনো সেনাবাহিনী নেই যে, আজ রাতে আমরা যা করেছি তা করতে পারে, এমনকি কাছাকাছিও নয়। এমন সেনাবাহিনী বিশ্বে কখনো তৈরি হয়নি, যা মার্কিন সেনাবাহিনী কিছুক্ষণ আগে করেছিল তা করতে পারে।

আগামীকাল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও জেনারেল কেইন সকাল ৮টায় পেন্টাগনে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন এবং আমি সকলকে, বিশেষ করে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

আমি শুধু বলতে চাই, ঈশ্বর, আমরা তোমাকে ভালোবাসি এবং আমরা আমাদের মহান সেনাবাহিনীকে ভালোবাসি। তাদের রক্ষা করো। ঈশ্বর মধ্যপ্রাচ্যের ওপর আশীর্বাদ করুন।

ঈশ্বর ইসরায়েলের ওপর আশীর্বাদ করুন এবং ঈশ্বর আমেরিকার ওপর আশীর্বাদ করুন।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।”

ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি’: ইরান

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা ‘গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি’ বলে দাবি করেছেন ওই এলাকার ইরানি এমপি। খবর আলজাজিরার।

ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি ইরানের কোম শহরে অবস্থিত। রবিবার ওই এলাকার এমপি রাইসি বলেন, “ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনার উপর মার্কিন আক্রমণটি ছিল ‘উপরের দিকে’।”

রাইসি বলেন, “সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে, আমি বলছি যে, মিথ্যাবাদী মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবির বিপরীতে, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং যা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার বেশিরভাগই কেবল মাটিতে ছিল, যা পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।”

তিনি আরো জানান, মার্কিন হামলার পরে তেজস্ক্রিয় পদার্থের কোনো লিকেজ শনাক্ত করা হয়নি।

ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, ফোরডোতে মার্কিন হামলার পর স্থানীয়রা ‘বড় বিস্ফোরণের কোনো লক্ষণ অনুভব করেনি’।

সংস্থাটি জানিয়েছে, “এলাকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিল। ঘটনার আরো বিশদ বিবরণ সরকারি বিশেষজ্ঞরা জানাবেন।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ফোরদো সহ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন। তবে হামলার প্রভাব সম্পর্কে কোনো স্বাধীন নিশ্চিতকরণ তথ্য পাওয়া যায়নি।

ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, হামলার আগেই ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে এই হামলা কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা স্পষ্ট নয়।

ইরানের যেকোনো প্রতিশোধের কঠোর জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার ঘটনায় তেহরান প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করলে দেশটিতে আরো বড় হামলার হুশিঁয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেছেন, “ইরানের যেকোনো প্রতিশোধের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।” খবর আল জাজিরার।

রবিবার ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, “আজ রাতে যা দেখা গেছে তার চেয়েও বেশি শক্তি দিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের যেকোনো প্রতিশোধ নেওয়া হবে।”

ইরানে আরো হামলার হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

শান্তি স্থাপন না হলে ইরানে আরো হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, “দেশটিতে আরো লক্ষ্যবস্তু বাকি রয়েছে।” খবর আল জাজিরার।

বাংলাদেশ সময় রবিবার (২২ জুন) সকাল ৮টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “হয় শান্তি স্থাপন হবে, না হয় ইরানের জন্য এক মর্মান্তিক পরিণতি ঘটবে। গত আট দিনে যা ঘটেছে, তার চেয়েও ভয়াবহ হবে।”

ট্রাম্প আরো বলেন, “এখনও অনেক লক্ষ্যবস্তু বাকি রয়েছে। আজ রাতের লক্ষ্য ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সবচেয়ে বৈধ। যদি দ্রুত শান্তি না আসে, তাহলে আমরা সেই অন্য লক্ষ্যবস্তুগুলোতেও আঘাত করব নিখুঁতভাবে, দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে।”

নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানালেন ট্রাম্প

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমারু বিমানগুলো হামলা চালানোর পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানে মার্কিন হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী একটি দল হিসেবে কাজ করেছেন।

ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী বিবি নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাতে চাই।”

ট্রাম্প আরো বলেন, “আমরা একটি দল হিসেবে কাজ করেছি। সম্ভবত এর আগে কোনো দল এতটা কাজ করেনি, এবং ইসরায়েলের জন্য এই ভয়াবহ হুমকি মুছে ফেলার জন্য আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। আমি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে তাদের অসাধারণ কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

ইরানে হামলা অসাধারণ সামরিক সাফল্য: ট্রাম্প

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমারু বিমানগুলো হামলা চালানোর পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানে হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ বলেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রবিবার সকাল ৮টায়) হোয়াইট হাউজ থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন ট্রাম্প।

ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা একটি ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’।

ট্রাম্প বলেন, “এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা বন্ধ করা এবং বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রের দ্বারা সৃষ্ট পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা।”

তিনি বলেন, “আমি বিশ্বকে জানাচ্ছি যে, হামলাগুলো ছিল একটি দর্শনীয় সামরিক সাফল্য।”

ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রবিবার (২২ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এগুলো হলো ফোরদো, নাতানঞ্জ এবং ইস্পাহান।

ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা- ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে খুবই সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।”

ট্রাম্প একটি ওপেন-সোর্স ইন্টেলিজেন্স অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে, শক্তিশালীভাবে সুরক্ষিত ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা নাই হয়ে গেছে।

এদিকে এসব পারমাণবিক স্থাপনায় কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থ নেই বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএ।

দেশটির সরকারি সম্প্রচার সংস্থার একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে আইআরএনএ জানিয়েছে, “এই তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় এমন কোনো পদার্থ নেই যা তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করে।”

এই মন্তব্যটি ইঙ্গিত দেয় যে ইরানি কর্তৃপক্ষ বোমা হামলার আগে স্থাপনাগুলো থেকে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে ফেলে থাকতে পারে।