কবর জিয়ারতে আখিরাতের স্মরণ
দৈনিক মৃত্যুকে স্মরণ করার কারণে মানুষের গুনাহ কমে যায়। আমলের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
কবর জিয়ারতের অনেক উপকারিতা আছে। জিয়ারতকারী সওয়াব লাভ করে।
কবর জিয়ারতের উদ্দেশে গিয়ে প্রথমে কবরবাসীদের উদ্দেশে সালাম দিতে হয়। সালাম দেওয়া সংক্রান্ত তিনটি হাদিস আছে। সহজ ও ছোট্ট দোয়া দুটি এই—
১. আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কবরবাসীদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দোয়াটি পাঠ করেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর, ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়া লাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আসার।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১০৫৩)
২. আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) একটি কবর জিয়ারতে গিয়ে বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম দ্বারা কাওমিম মুয়মিনিন ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৪৯)
কবর জিয়ারতের পদ্ধতি
হাদিসে কবর জিয়ারতের নির্ধারিত বিশেষ কোনো পদ্ধতির কথা নেই। নির্ধারিত কোনো সুরা বা দরুদ পাঠের কথাও আসেনি। তবে এ ক্ষেত্রে সুরা মুলক তিলাওয়াত করা উত্তম। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার এক সাহাবি একটি কবরের ওপর তাঁর তাঁবু স্থাপন করেন। তিনি ধারণা করতে পারেননি যে এটি একটি কবর। হঠাৎ তিনি অনুভব করেন যে কবরে একজন লোক সুরা মুলক তিলাওয়াত করছেন। অবশেষে তিনি তা পাঠ শেষ করেন। তিনি পরে নবীজি (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এক স্থানে আমার তাঁবু ফেলি। আমার ধারণা ছিল না যে এটি একটি কবর। হঠাৎ অনুভব করি, একজন লোক সুরা মুলক তিলাওয়াত করে খতম করলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এটি হলো প্রতিরোধক। এটি হলো মুক্তিদায়ক। এটি কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেয়। এটি কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেয়।’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯০)
এ ছাড়া সুরা ইয়াসিন, আয়াতুল কুরসি, সুরা ইখলাস এবং কয়েকবার দরুদ পাঠ শেষে ইসালে সওয়াব করা উত্তম।
কবর জিয়ারতের সাবধানতা
বর্তমান সমাজে কবর নিয়ে অনেক বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি পরিলক্ষিত হয়। কবরকে লক্ষ করে চারপাশে তাওয়াফ করা, কবরে শায়িত ব্যক্তির কাছে নিজের প্রয়োজন পূরণের জন্য আবেদন করা এবং সিজদা করা—সবই কুফর ও শিরক। ঈমানবিধ্বংসী এসব কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।