অজু পবিত্রতা অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। শারীরিক পবিত্রতার দিক থেকে গোসলের পরই অজুর স্থান। মহান আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন (সুরা তাওবা, আয়াত: ১০৮)। হাদিসে অজুর বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে।
অজু প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন- যখন কোনো মুসলিম অথবা মুমিন বান্দা অজু করে আর সে তার মুখ ধৌত করে, তখন অজুর পানি অথবা অজুর পানির শেষ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তার চেহারা থেকে সব গুনাহ বের হয়ে যায়। যা সে তার দু’চোখ দিয়ে দেখেছিল। আর যখন সে তার দু’হাত ধৌত করে তখন অজুর পানি বা অজুর পানির শেষ ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তার উভয় হাত থেকে সকল গুনাহ বের হয়ে যায়, যা সে হাত দিয়ে ধরেছিল, এমনকি শেষ পর্যন্ত সে তার গুনাহ থেকে পাক হয়ে যায়। (তিরমিজী, হাদিস: ২, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৭০)
অজু করার সময় তাড়াহুড়া না করার জন্য কঠোর নির্দেশ রয়েছে। এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রা.) বলেন, এক সফরে রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে রয়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন, এদিকে আমরা (আসরের) সালাত আদায় করতে দেরি করে ফেলেছিলাম এবং আমরা অজু করছিলাম। আমরা আমাদের পা কোনোমতো পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। পরে রাসুল (সা.) উচ্চস্বরে বললেন- পায়ের গোড়ালিগুলোর (শুষ্কতার) জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে। তিনি দু’বার বা তিনবার এ কথা বললেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৮)
তবে অনেক মুসল্লি একটি বিষয়ে প্রশ্ন করেন। প্রশ্নটি হলো অজু অবস্থায় ঘুমের ভাব বা ঝিমুনি এলে অজু ভেঙে যাবে কি?
এ বিষয়ে অধিকাংশ আলেমের মতে, অজু অবস্থায় বসে বসে ঝিমালে বা ঘুম ঘুম ভাব এলে অজু ভঙ্গ হবে না। তবে কোনোকিছুতে হেলান দিয়ে বা শুয়ে ঘুমিয়ে গেলে অজু ভেঙে যাবে।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে তিনি বলেন, একবার এশার জামাত দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তখন এক ব্যক্তি বলল, আমার কিছু প্রয়োজন আছে। পরে রাসুলুল্লাহ (সা.) দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে আলাপ করতে লাগলেন। তিনি এতক্ষণ পর্যন্ত আলাপ করলেন যে, উপস্থিত সকলে অথবা কিছু লোক বসে বসে ঘুমিয়ে পড়ল। তারপর তারা সালাত আদায় করলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭২২)