লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

যিলহজ্জ মাসের সাত তারিখ যোহর নামাজের পর কাবার মসজিদের ইমাম বা সুলতান একটি ভাষণ দান করেন। ঐ ভাষণে হজ্জের ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মিনা গমন করা, আরাফাতে অবস্থান ও সালাত আদায় করা, আরাফাত হতে প্রস্থান করে মুযদালেফায় গমন করা, সেখান হতে মিনায় গমন করা, মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ করা, কুরবানী করা, সেখান হতে মক্কায় উপস্থিত হয়ে তাওয়াফে যিয়ারত করা ও সাফা মারওয়ার সাঈ সম্পন্ন করে মিনায় আরো দু’দিন কঙ্কর নিক্ষেপ করা ইত্যাদি হজ্জের আনুষ্ঠানিক বিষয়াদির পরিপূর্ণ চিত্র-তুলে ধরা হয়। সে মতে হজ্জ যাত্রীগণ হজ্জ আদায় করার জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন। অনন্তর পর দিন ফজর সালাত মক্কায় সম্পন্ন করে হজ্জ যাত্রীরা মিনার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এই দিনটাকে অর্থাৎ যিলহজ্জ মাসের অষ্টম তারিখটাকে ইয়াওমুত তারবিয়্যা বলা হয়। মোটকথা, পরিতৃপ্ত মনে হজ্জ যাত্রীগণ পদব্রজে বা যানবাহন যোগে মিনায় পৌঁছেন। সেখানে যিলহজ্জ মাসের নবম তারিখের রাতটি অতিবাহিত করেন।

তারপর নবম তারিখের ফজর নামাজ আদায় করে আরাফাত প্রান্তরে গমন করেন ও অবস্থান করেন। আরাফাত প্রান্তরের সর্বত্র তাঁবু ও অস্থায়ী কুটিরে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হাজীদের অনেকেই আরাফাতে অবস্থিত জাবালে রহমতে আরোহণ করেন এবং সেখানে দোয়া ও মোনাজাত করেন। সর্বত্র উচ্চ লাব্বাইক ধ্বনি শ্রুত হতে থাকে। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এভাবে অতিবাহিত হয়। মোটকথা যিলহজ্জের নবম তারিখ হচ্ছে আরাফাতে অবস্থানের দিন এবং এই অবস্থানের নির্ধারিত সময় হচ্ছে ঐ তারিখে দ্বিপ্রহরের পর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। নবম তারিখে যোহর নামাজের পূর্বে ইমাম সাহেব জুমুয়ার খুতবার মতো দুটি খুতবা প্রদান করেন। হজ্জ যাত্রীগণ ভাবাবেগে অনুপ্রাণিত হয়ে উচ্চৈস্বরে লাব্বাইক ধ্বনি করতে থাকেন। সূর্যাস্তের পর পরই মুযদালেফার দিকে প্রস্থান শুরু হয়ে যায়। হজ্জ যাত্রীগণ ব্যতীত অন্য ব্যক্তিরা ইচ্ছা করলে আরাফার দিন রোজা রাখতে পারেন। তা বড়ই সওয়াবের কাজ। মহান আল্লাহ তায়ালা সকল হজ্জ যাত্রীদের হজ্জ কবুল ও মনজুর করুন, আমীন। ওয়াল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।