চলমান ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের মধ্যে, মার্কিন বিমান বাহিনী আটলান্টিক মহাসাগরে মার্কিন ঘাঁটি থেকে বিপুল সংখ্যক ট্যাঙ্কার বা জ্বালানিবাহী বিমান মোতায়েন করার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং তথ্য অনুসারে, রবিবারের শেষের দিকে কেসি-১৩৫ এবং কেসি-৪৬ ট্যাঙ্কার বিমানের সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, কমপক্ষে ৩০টি বিমান পূর্ব দিকে মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ধরনের ট্যাঙ্কার বা জ্বালানিবাহী বিমানগুলো তাদের নিজ দেশ থেকে অনেক দূরে বিমান হামলায় অংশগ্রহণকারী বিমানগুলোতে জ্বালানি ভরার জন্য প্রয়োজন, যেমন ইরানে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলা।
অর্থাৎ, ইরানে হামলা চালাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো আকাশে থাকা অবস্থাতেই মার্কিন কেসি-১৩৫ এবং কেসি-৪৬ ট্যাঙ্কার বিমানগুলো থেকে জ্বালানি নিতে পারবে।
মধ্য ইসরায়েলে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নিহত ৩, আহত ১০
আজ সোমবার মধ্য ইসরায়েলের তেল আবিবসহ চারটি এলাকায় ইরানের ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাতে হেনেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, হামলার স্থান থেকে ৬৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৩০ বছর বয়সী একজন নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন, ছয়জন মাঝারিভাবে আহত এবং ৬০ জন হালকা আহত বা তীব্র উদ্বেগে ভুগছেন।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
এমডিএ আরো জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় ইরানের চারটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সরাসরি আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। ঘটনাস্থলগুলোতে উদ্ধার অভিযান জোরদারভাবে চলছে।
ইরানের দশম দফার হামলায় কেঁপে উঠল ভোরের ইসরায়েল
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। রবিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর পর, সোমবার (১৬ জুন) ভোর হতে না হতেই দ্বিতীয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইরানের এটি দশম আক্রমণ।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সোমবার ভোরে ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরপরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হোম ফ্রন্ট কমান্ড সাধারণ ইসরায়েলিদের বোমা শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছে।
তেহরান টাইমস জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফায় সরাসরি আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কঠোর সেন্সরশিপ সত্ত্বেও, অনলাইনে প্রচারিত ফুটেজে হাইফায় একটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগুনে পুড়ে গেছে বলে দেখা গেছে। অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। তেল আবিবের একাধিক স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরান ইসরায়েলের নেগেভ মরুভূমি এবং কিরিয়াত গাটের কৌশলগত স্থানগুলোর পাশাপাশি হাইফার অন্যান্য অঞ্চলগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে ইসরায়েলের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে তেহরান।
আগের দিনগুলোতে, ইরান ইসরায়েলের বৃহত্তম তেল শোধনাগার এবং ১৫০টিরও বেশি সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি করেছে।
শুক্রবার ভোরে তেহরানের আবাসিক ভবন ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা চালানোর পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
তেহরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জন ইরানি সামরিক কর্মকর্তা, ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং ২২০ জনেরও বেশি ইরানি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইরান ইসরায়েলকে ‘অসহায়’ না করা পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।