‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গতকাল সচিবালয়ে বড় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন আন্দোলনে নামা কর্মচারীরা। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল রবিবার সকাল ১১টা থেকে সচিবালয়ের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু করেন কর্মচারীরা। এক পর্যায়ে তাঁরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবেশপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
সেখানে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা একে একে বক্তব্য দেন। কর্মসূচি শেষে আজ সোমবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।
সচিবালয়ের সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠন করা বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে হচ্ছে এই আন্দোলন। বিক্ষোভ সমাবেশে ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর ও মো. নুরুল ইসলাম, কো-মহাসচিব নজরুল ইসলামসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে এবং এর বাইরে দুই ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি পালন করব। সকাল ১১টায় অবস্থান শুরু করে দুপুর ১টায় জোহরের নামাজ পড়ে আমরা কর্মবিরতি শেষ করব।’ সরকার দাবি না মানলে সারা দেশে আন্দোলন জোরদার করা হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
নুরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি, অধ্যাদেশটি সংশোধন করা হবে।
কিন্তু আমাদের আলোচনাপ্রক্রিয়ায় রাখা হচ্ছে না। আমরা কোনো সংশোধন মানি না। আমরা এই কালো অধ্যাদেশ বাতিল চাই।’
আরেক কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, ‘আইন অনুযায়ী সচিবালয় হচ্ছে কেপিআইভুক্ত এলাকা। এখানে মিছিল-মিটিং চলে না।
তবু বাধ্য হয়ে শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচি করছি।’ অবিলম্বে দাবি মেনে নিয়ে তাঁদের কাজে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পরে বিক্ষোভ মিছিলটি সচিবালয়ের বিভিন্ন প্রান্ত প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে কর্মচারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে, ‘মানি না মানব না, ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানব না, অবৈধ কালো আইন’, ‘ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সর্বশেষ ঈদের ছুটির আগে গত ৩ জুন পর্যন্ত সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেছেন কর্মচারীরা।