মাথাব্যথা—একটি অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা, যা প্রায় সবাইকেই কোনো না কোনো সময়ে ভোগায়। কিন্তু মাথার যন্ত্রণা মানেই যে মাইগ্রেন, এমনটা ভাবা ভুল। অনেকেই এই ভুলটি করেন এবং ভুল চিকিৎসায় উপসর্গের জটিলতা বাড়িয়ে ফেলেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাথাব্যথার ধরন বুঝে তবেই নিতে হবে চিকিৎসা।
চলুন, জেনে নিই কোন ধরণের মাথাব্যথা কেমন এবং কবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
টেনশন হেডেক (Tension Headache)
এই ধরণের মাথাব্যথা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মাথার দুই পাশে চাপ অনুভব হয়, অনেক সময় পিছন দিক থেকে ব্যথা শুরু হয়ে সামনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত চোখের ওপর চাপ, মানসিক চাপ বা দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে এমন হয়।
অনেকেই এটাকে অবহেলা করেন, কিন্তু ঘন ঘন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সাইনাস হেডেক (Sinus Headache)
ঠাণ্ডা লাগা বা নাক বন্ধ থাকলে মাথা ভারী লাগে, গাল, নাক ও চোখের পেছনে চাপের অনুভূতি হয়। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে মাথা ঝোঁকালে যন্ত্রণা বাড়ে। সাইনাস প্যাসেজ ফুলে গেলে এই ধরনের ব্যথা হয়, যাকে সাইনাস হেডেক বলা হয়।
ক্লাস্টার হেডেক (Cluster Headache)
চোখের পাশে থেকে শুরু হয়ে মাথার একদিকে তীব্র ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে—এটি ক্লাস্টার হেডেকের লক্ষণ। এই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে মনে হয় মাথায় কেউ হাতুড়ি মারছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলতে পারে এমন যন্ত্রণা, এমনকি দিনে একাধিকবারও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এটি নির্দিষ্ট সময়ে, দিনের পর দিন হতে দেখা যায়। মস্তিষ্কে রক্তনালির প্রসারণ বা সেরোটোনিন ও হিস্টামিন নিঃসরণের কারণেও এই ধরণের ব্যথা হয়।
মাইগ্রেন (Migraine)
মাইগ্রেন কেবল মাথাব্যথা নয়, এটি একটি স্নায়ুবিক রোগ। মস্তিষ্কের কার্যকলাপে পরিবর্তনের ফলে এই ব্যথা দেখা দেয় এবং এর সঙ্গে থাকে বমিভাব, ক্লান্তি, আলো ও গন্ধে অতিসংবেদনশীলতা। অতিরিক্ত শব্দ, তীব্র আলো বা মানসিক চাপ মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ-এর ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, বিশ্বে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ মাইগ্রেন সমস্যায় ভোগেন।
চিকিৎসার প্রয়োজন কখন?
যদি মাথাব্যথা ঘন ঘন হয়, দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটায় বা ব্যথার ধরন বদলায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। কারণ যেকোনো ধরণের মাথাব্যথা দীর্ঘমেয়াদে বড় কোনো অসুস্থতার পূর্বাভাস হতে পারে।
সূত্র : এবিপি বাংলা