সূর্যের আলো সরাসরি শরীরে পড়লে শরীরে যা ঘটে

সূর্যের আলো সরাসরি শরীরে পড়লে কয়েক মুহূর্তের মধ্যে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। সূর্যের আলোকে ভিটামিন ডি-এর উৎস বলা হয়। চিকিৎসকেরা বলেন, ‘‘শুধুমাত্র খাবার খেয়ে ভিটামিন ডি- এর অভাব পূরণ করা সম্ভব  নয়। তার চেয়ে ভালো ঘরের বাইরে কিছুটা সময় সরাসারি সূর্যের আলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা। ’’ সূর্যের আলো শরীরে পড়লে শরীর উষ্ণতা অনুভব করতে শুরু করে। যার ফলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত হয়। সূর্যের আলো ইমিউন সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

মন ভালো করে: শরীরে সরাসরি সূর্যের আলো লাগালে ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হয়। এর কারণ হলো রোদের সংস্পর্শে মানুষের মস্তিষ্ক সেরোটোনিন নামের হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। এই হরমোন মন-মেজাজ ভালো করে, মনকে শান্ত করে।

মনোযোগ বাড়ে: শরীরে সরাসরি সূর্যের আলো লাগলে মনোযোগ তৈরি হয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মেঘলা বা আবছা আলোর দিনগুলোর তুলনায় রোদ্রোজ্জ্বল দিনে মানুষের রক্তে সেরোটোনিনের মাত্রা বেশি থাকে। এতে আরও দাবি করা হয়েছে, কোন ঋতু চলছে বা ঘরের বাইরে তাপমাত্রা কেমন তারচেয়েও মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদনের হার বেশি সম্পর্কিত সরাসরি উজ্জ্বল সূর্যালোকের সময়কালের সাথে।

ব্যথা কমে: শরীরে সরাসরি সূর্যের আলো লাগলে ত্বকের কোষগুলোকে এন্ডোরফিন তৈরি করতে পারে। যার ফলে শরীর অনেক ভালো বোধ করে। পেশীর ব্যথা কমে।

রক্তচাপ কমে: গবেষকরা জানিয়েছেন, শরীরে রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে রোদের সরাসরি ভূমিকা আছে।  এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় দেখিয়েছেন, ২০ মিনিটের মতো সময় হাতে রোদ লাগালে তা ত্বকে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে। রোদ থেকে উপকারিতা পাওয়ার জন্য ২০ মিনিট রোদ গায়ে লাগানোই যথেষ্ট। ২০ মিনিট রোদে থাকলে রক্ত নালীগুলো প্রসারিত হয় এবং রক্তচাপ নেমে আসে।

শক্তি বাড়ে: হাড়ের জন্য ভিটামিন ডি খুবই দরকার, এই উপাদান সবচেয়ে বেশি পাওয়া যেতে পারে রোদ থেকে। রোদ শরীরে পড়লে শরীর ভিটামিন ডি উৎপাদন করতে পারে। এই উপাদান হাড়কে শক্তিশালী করে। গবেষকরা বলছেন,  ‘‘রোদ থেকে ভিটামিন ডি নেওয়ার কারণে অ্যাথলেটদের পেশীর শক্তি বেড়েছে। পেশীর কোষ বৃদ্ধিতে উদ্দীপনা তৈরির মাধ্যমে কাজ করেছে এটি।’’

উল্লেখ্য, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও রোদ বা সূর্যের আলো ভূমিকা রাখতে পারে। তবে প্রখর রোদ ত্বকের ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি