রায়পুরে সাবেক স্ত্রীর মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কারাগারে

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চরবংশী গ্রামের সাবেক স্ত্রী সেলিনা আক্তারের আদালতে দায়ের করা যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত।

বুধবার বিকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল (রায়পুর) আদালতে বিচারক সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গ্রেফতারকৃত আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী গ্রামের মৃত তোফায়েল আহাম্মদের ছেলে। বাদী সেলিনা একই গ্রামের দেওয়ান বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে।

অপরদিকে আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমানের অভিযোগ, সেলিনার দায়ের করা মামলায় প্রতারণার মাধ্যমে কাবিন নামায় দেনমোহরের ১ লাখ টাকার অঙ্ক পরিবর্তন করে ২১ লাখ টাকায় উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য তালাকের নোটিশ দিলেও ঘটনাটি মীমাংসা করা হয়নি। কাবিন নামার সঠিক তথ্য যাচাইয়ের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন জানান, স্ত্রীর মামলায় আদালত থেকে গত ৩ জুন আসামি মোস্তাফিজুর রহমান জামিন নিয়েছেন। বুধবার জামিন মেয়াদের শেষ দিন ছিল। এরমধ্যেই ঘটনাটি মীমাংসা করার কথাও ছিল। কিন্তু আইনজীবী তা করেননি।

এতে তিনি পুনরায় জামিন আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তার পক্ষে অন্য কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তিনি নিজেই শুনানি করেন। কাবিননামার আবেদন তিনি করেছেন।

এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে ৩০ জানুয়ারি মোস্তাফিজ ও সেলিনার বিয়ের কথা হয়। ২০২০ সারের ২৮ জানুয়ারি ২১ লাখ টাকার দেনমোহরে সামাজিকভাবে তারা বিয়ে করে। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ব্যবসার কথা বলে টাকা চাইলে সেলিনা তার স্বামীকে ১২ লাখ টাকা ধার দেয়। ওই টাকা না দিয়েই ফের ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে মোস্তাফিজ। ওই টাকার জন্য ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ মারধর করে সেলিনাকে তিনি বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে শিশু সন্তান নিয়ে সেলিনা বাবার বাড়িতে আছেন। মোস্তাফিজ তাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন না।

এ ঘটনায় যৌতুক আইনে গত ২৮ এপ্রিল আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেলিনা। এদিকে ৮ এপ্রিল মোস্তাফিজ তার স্ত্রী সেলিনাকে তালাকের নোটিশ দেন। তালাকের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন ১ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে হয়। তার সঙ্গে বিয়ের আগেও সেলিনার আরো ২টি বিয়ে হয়। সেখানে তার ১৫ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। এসব ঘটনায় পারিবারিক কলহে অতিষ্ঠ হয়ে সেলিনাকে তিনি তালাকের নোটিশ দেন। অন্যদিকে মোস্তাফিজের দাবি তাদের বিয়ের কাবিনে দেনমোহর ছিল ১ লাখ টাকা। প্রতারণার মাধ্যমে ১ লাখ এর স্থলে ২১ লাখ টাকা বানিয়ে আদালতে মামলায় দেনমোহরের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে মোস্তাফিজ

আদালতের কাবিন নামার মূল কপি ও কাজী মো. ইসরাফিল হোসেনের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেছেন। কাবিন নামার সঠিক তথ্য যাচাইয়ের জন্য তিনি আদালতে আবেদন করেছেন।