যশোরে করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট শনাক্ত

যশোরে এক নারীর শরীরের করোনা (কোভিড-ওমিক্রন এক্সইবি’র) নতুন ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।জানা গেছে, ওই নারীর বয়স ৪৫ বছর।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ইবনে সিনা হাসপাতালের ল্যাবে ‘র‍্যাপিট এন্টিজেন্ট’ পরীক্ষার এ ভাইরাস ধরা পড়ে। পরে স্বজনরা সন্ধ্যায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভর্তি করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন শাফায়াত।

হাসপাতালা সূত্রে জানা গেছে, শহরের ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ‘র‍্যাপিট এন্টিজেন্ট’ পরীক্ষায় ওই নারীর শরীরের করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেন। স্বজনরা যশোর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্ধ্যার দিকে কোভিড ইউনিটে তাকে ভর্তি করেন। ওই নারী সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার বাসিন্দা হলেও বর্তমানে যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।

এদিকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের ডাক্তার মৌসুমি আক্তার বলেন, ‘র‍্যাপিট এন্টিজেন্ট পরীক্ষা কোভিড ধরা পড়েছে। যশোরে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাই রোগীর পিসিআর পরীক্ষার জন্য নমুনা শনিবারে সংগ্রহ করে ঢাকায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।’

তিনি জানান, জেলার সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্য বিধিমেনে সচেতনতা অবলম্বন করলে এ ভাইরাস থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন।

ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে তথ্য কর্মকর্তা আসিফ নেওয়াজ জানিয়েছেন, গত সোমবার শরীরের জ্বর নিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি হন। তার শরীরের ব্যাথা, দুর্বলসহ বিভিন্ন সমস্য শরীরে দেখা দেয়। প্রথম ডেঙ্গু ভেবে চিকিৎসকরা চিকিৎসা প্রদান করেন। কিন্তু শরীরের কোনো উন্নতি না হওয়ার কারণে চিকিৎসক নতুন করে বুধবার সকালে ‘র্যাপিট এন্টিজেন্ট’ পরীক্ষার নির্দেশ প্রদান করেন। ল্যাবে পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার র্যাপিট এন্টিজেন্ট’ পরীক্ষার প্রতিবেদন আসলে ঐ রোগীর শরীরের কোভিড-ওমিক্রন এক্সইবি’র শনাক্ত হয়। ফলে সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হয়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন শাফায়াত বলেন, ‘একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোন র্যাপিট এন্টিজেন্ট পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে এটি নতুন ভাইরাস কি না সেটা জানার জন্য ঢাকা পিসিআর ল্যাবে শনিবার নমুনা পাঠানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার কীট নেই; তাই এই মুহূর্তে রোগীকে পরীক্ষা ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি নিতে হচ্ছে। বিষয়টি ঢাকা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়েছে। করোনা পরীক্ষার কীট চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। কীট হাতে পাওয়া মাত্র আগামী সপ্তাহের যে কোনোদিন থেকে হাসপাতালে পরীক্ষা শুরু হবে। তবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারাও দ্রুত সময়ের মধ্যে জিনোম সেন্টার চালু করবেন।’

যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক রাসেল বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা পেয়ে হাসপাতালে কোভিড ইউনিট খোলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। চারপাশে কোভিড-ওমিক্রন এক্সইসি আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে ঢাকা ও রাজশাহীতে বেশ কয়েকজন করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। যশোরে আক্রান্ত নারীর শরীরে এই নতুন ভেরিয়েন্ট আছে কি না তা পিসিআর পরীক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই যশোরবাসীকে সকর্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।’