উখিয়ায় যৌথ অভিযানে অপহরণকৃত রোহিঙ্গা উদ্ধার :অস্ত্রসহ অপহরণকারী গ্রেফতার

কায়সার হামিদ মানিক,কক্সবাজার।
র‌্যাব পরিচয়ে উখিয়ার ক্যাম্প-১৫ থেকে অপহরণকৃত রোহিঙ্গাকে যৌথ অভিযান চালিয়ে টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গীখালী গহীণ অরণ্য থেকে উদ্ধার করেছে। এসময় অস্ত্রসহ অপহরণকারী মূলহোতা ১১টি মামলায় পলাতক বরখাস্ত হওয়া র‌্যাব সদস্য মো. সুমন মুন্সিকে (৩২) অস্ত্র, ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
উদ্ধার অভিযান শেষে ১৫ জুন বিকালে র‌্যাব-১৫ সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া অফিসার) সহকারী পুলিশ সুপার আ.ম. ফারুক জানান, গত ১১ জুন রাত আনুমানিক ১১টায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৫ বসবাসরত মো. রহিমুল্লাহর ছেলে মো. হাফিজ উল্লাহকে এনায়েত উল্লাহ ও নবী হোসেনের যোগসাজশে র‌্যাব পরিচয়ে ৩ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বরখাস্ত সৈনিক সুমন, সন্ত্রাসী রাকিব, সন্ত্রাসী শিকদার নিজ বসতঘর হতে  টেকনাফের রঙ্গিখালী গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অজ্ঞাত স্থান থেকে সন্ত্রাসীরা ভিকটিমের পরিবারের নিকট ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করেন। অপহরণের সময় সন্ত্রাসীরা ভিকটিমের পরিবারকে প্রশাসনের সহায়তা নিলে হাফিজ উল্লাহকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। অপহরণের সংবাদ প্রাপ্তির পরক্ষণেই র‌্যাব-১৫ ভিকটিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করতঃ ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বিকালে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি দল রঙ্গিখালীতে অপহরণের অন্যতম প্রধান হোতা কুখ্যাত ডাকাত সর্দার শাহ আলমের বাড়িতে হানা দিয়ে আফ্রিদি ও আব্দুল গফুর নামে দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। র‌্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করে শনিবার বিকেলে উখিয়ার মরিচ্যা বাজার থেকে মূল অপহরণকারী বরখাস্ত সৈনিক মো. সুমন মুন্সিকে আটক করতে সক্ষম হয়। সন্ত্রাসী সুমনের মাধ্যমে অপহরণকারী ডাকাত শাহ আলম, সন্ত্রাসী রাকিব এবং সন্ত্রাসী শিকদারকে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার্তা প্রেরণ করলেও উল্লেখিত সন্ত্রাসীরা তাতে কোন কর্ণপাত করেনি। এরই প্রেক্ষিতে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য ১৫ জুন র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, এপিবিএন ও বনবিভাগের ২৫৬ জন জনবল নিয়ে ভিকটিমকে আটকে রাখার সম্ভাব্য গহীন অরণ্যে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহরণের ৭২ ঘন্টা পরে ভিকটিম হাফিজ উল্লাহকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই এবং ১টি দেশীয় অস্ত্র, ৩ রাউন্ড এ্যমুনেশনসহ র‌্যাবের ইউনিফর্ম ও ওয়াকিটকি উদ্ধারে সক্ষম হই। আটককৃত সন্ত্রাসীকে পরবর্তীতে আইনী প্রক্রিয়া সম্পাদনের নিমিত্তে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
আটককৃত সন্ত্রাসী মো. সুমন মুন্সি (৩২) গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার ডুমরাকান্দি গ্রামের আকবর আলী মুন্সি ও মমতাজ বেগমের পুত্র। তিনি ২০১৯ সালে চাকুরিচ্যুত সেনা সদস্য। সন্ত্রাসী সুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ইতোপূর্বে মোট ১১টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়। রঙ্গিখালীর গহীন পাহাড়সমূহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গত মাসেও যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের দমনের লক্ষ্যে এবং গহীন জঙ্গলে শক্ত নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত ব্যবধানে অভিযান পরিচালনা করবে।