বিবাদ থেকে বন্ধন: কেরানীগঞ্জ কারাগারে ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করলেন গায়ক নোবেল

যে মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলকে কারাগারে যেতে হয়েছিল, সেই মামলার বাদী ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান প্রিয়াকে অবশেষে বিয়ে করলেন গায়ক। আদালতের নির্দেশে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বৃহস্পতিবার তাদের রেজিস্ট্রি কাবিননামা সম্পন্ন হয়। আলোচিত এই গায়ক ও মামলার বাদীর এই বিয়ে যেন ‘বিবাদ থেকে বন্ধনে’ রূপ নেওয়ার এক ব্যতিক্রমী অধ্যায় হয়ে রইল।

এদিন রাতে সংবাদমাধ্যমে ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কারাগার সূত্রে জানা যায়, বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন উভয় পক্ষের সাক্ষী—নাজমা হোসেন, সাবিহা তারিন, মো. খলিলুর রহমান, মো. সাদেক উল্লাহ ভূইয়া।

এর আগে বুধবার ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নোবেলের কাবিনমূলে বিয়ের ব্যবস্থা করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। একইসঙ্গে উভয়ের সম্মতি সাপেক্ষে এ বিয়ে সম্পাদন করে আদালতকে অবহিত করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দেওয়া হয়। এ সময় মামলার বাদী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৯ মে রাত ২টার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের বাসা থেকে নোবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বাড়িতে আটকে রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণের মামলা করেন ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক ওই ছাত্রী।

পরদিন ২০ মে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করে পুলিশ। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

অপর দিকে নোবেলের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১৯ সালে ভারতের জি-বাংলা টিভির রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’তে অংশ নিয়ে তৃতীয় হয়ে আলোচনায় আসেন নোবেল। তবে নানা কর্মকাণ্ডে তাকে নিয়ে বিতর্কও বাড়তে থাকে।

২০২৩ সালেরই ২৬ এপ্রিল কুড়িগ্রামে গান পরিবেশনের সময় মঞ্চে নোবেলের ‘অসংলগ্ন আচরণে’ ক্ষুব্ধ হয়ে জুতা ও পানির বোতল ছোড়ে দর্শক। আর তাতে পণ্ড হয় ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি ও সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

তবে সম্প্রতি বিভিন্ন কনসার্ট ও গণমাধ্যমের অনুষ্ঠানে প্রায়ই উপস্থিত হয়ে নিজের ‘স্বাভাবিক’ জীবনে ফিরে আসার জানান দিচ্ছিলেন নোবেল। এরমধ্যেই নতুন অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে তাকে জেলে যেতে হয়।